১৯ বছর পর গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে লুৎফুজ্জামান বাবর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন। তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ্, দ্রুত ফিরে আসবেন।
লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, আমি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। সাড়ে ১৭ বছর পর নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জেল থেকে মুক্ত হয়েছি। আমাদের জাতীয়তাবাদী দল থেকে একটি টিম করা হয়েছে। সেই টিমের মধ্যে আমিও একজন। আমার সঙ্গে সিনিয়র সেক্রেটারি কামরুজ্জামান সাহেব রয়েছেন। মাহবুব সাহেব আছেন। আরও একজনের থাকার কথা ছিল, কিন্তু তিনি আসতে পারেননি। তিনি বলেন, আমাদের আসার উদ্দেশ্য কিছু কিছু জিনিস আমাদের উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে বিষয়গুলো আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের আসার উদ্দেশ্য বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারকে সহযোগিতা করা। সেই সহায়তার অংশ হিসেবে আমরা আমাদের কনসার্ন জানিয়েছি। তারাও একমত হয়েছেন। আলোচনা মোটামুটি ফলপ্রসূ হয়েছে। দ্যাটস ইট। লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে পতিত সরকার একটি বিশেষ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেটা আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন। এস আলম গ্রুপের সঙ্গে। তাদের সেই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের নির্বাচন বানচাল করা। নির্বাচনে বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটানো। এটি একটি উদ্বেগের জায়গা। সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। আরও অনেক বিষয়ে যেমন- বিভিন্ন অবৈধ অস্ত্র ও লুট হওয়া অস্ত্র এখনো যে উদ্ধার হয়নি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, একটা ব্যাপারে আমরা কনসার্ন জানিয়েছি। অতি সমপ্রতি এএসআই নিয়োগ হচ্ছে। সাধারণত নিয়োগ হয় কনস্টেবল, এসআই ও এএসপি পদে। কিন্তু এবার এএসআই নিয়োগ হচ্ছে। যারা কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করে তাদের একটা আশা থাকে ভবিষ্যতে এএসআই হবে। তারা ইন্সপেক্টর পর্যন্ত হতে পারে। আবার এসআই হিসেবে যারা যোগদান করে তারা ডিআইজি পর্যন্ত হতে পারে। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন মনে করছেন এমন প্রশ্নে বলেন, আমি এটুকু বলবো, তারা ভালো করার যথেষ্ট চেষ্টা করছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি স্যারের (লুৎফুজ্জামান বাবর) সঙ্গে তিন বছর কাজ করেছি। সুতরাং উনার সঙ্গে আমার অনেক আগের পরিচয়। আজ একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। আমরা অনেক ধরনের কথাবার্তা বলেছি। পারিবারিক ও নানান বিষয়ে কথা হয়েছে।
বিকাল সোয়া ৪টার কিছু পরে লুৎফুজ্জামান বাবর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কক্ষে প্রতিনিধিদল নিয়ে প্রবেশ করেন। দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি বের হন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম ও সাবেক সিনিয়র সচিব কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।